ঋতুবৈচিত্র্যের দেশ বাংলাদেশ। এ দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি কৃষি। রবি ফসলের সমারোহ আর শিমুল-পলাশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুলকিত করে গ্রামবাংলার কৃষক-কৃষাণির হৃদয়-মন। এ মৌসুমে একদিকে যেমন বিভিন্ন শাকসবজি উৎপাদিত হয় অন্যদিকে বোরো মৌসুমের ধান উৎপাদনের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বোরো মৌসুমে উৎপাদিত ধানের ওপরই দেশের খাদ্য নিরাপত্তা বহুলাংশে নির্ভরশীল। এজন্য কৃষির সার্বিক উন্নয়নে সুপরিকল্পিতভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এ দেশের সরকার, কৃষি গবেষক, সম্প্রসারণবিদ, কৃষিকর্মী, কৃষক-কৃষাণি সবাই। বোরো মৌসুমে ধানের ফলন কিভাবে বাড়ানো যায় সে প্রচেষ্টা আমাদের সবাইকে সমন্বিতভাবে অব্যাহত রাখতে হবে। পরিবর্তিত আবহাওয়ার সঙ্গে তালমিলিয়ে ধানের চারা রোপণ, সার ও সেচ প্রয়োগ, রোগবালাই, পোকামাকড় দমন প্রভৃতি কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে হবে। বোরোর বাম্পার ফলনের প্রত্যাশায় কৃষক, সম্প্রসারণকর্মী সবাই ব্যস্ত থাকেন ক্ষেতখামারে। সবাই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের আশায় অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট সবার আশা-আকাক্সক্ষা-প্রত্যাশা পূর্ণতা লাভ করুক এটাই আমরা আশা করি।
সুপ্রিয় পাঠক ও চাষি ভাইয়েরা আপনারা জানেন, আলু এ দেশের একটি অন্যতম প্রধান কন্দালজাতীয় সবজি ফসল। বর্তমানে দেশে ৪.৭২ লাখ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে এবং প্রায় ৮৫ লাখ টন ফলন পাওয়া যাচ্ছে। আলু সঠিকভাবে সংরক্ষণ করে সারা বছর খেতে পারলে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। পুষ্টি উপাদানের দিক থেকে আলু ভাতের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া আলু দিয়ে রকমারি মুখরোচক খাবারও তৈরি করা যায়। বর্তমান সরকার আলুর গুরুত্ব বিবেচনা করে দেশের চাহিদা পূরণের পাশাপাশি বিদেশে রফতানি করছে। অদূর ভবিষ্যতে আলুর ব্যবহার ও রফতানি আরও সম্প্রসারিত হোক এটাই আমরা কামনা করি।
চাষি ভাইয়েরা, আপনারা জানেন, ব্রিটিশ বেনিয়াদের অত্যাচার নির্যাতনের ইতিহাসসমৃদ্ধ নীল চাষ দেশের উত্তরাঞ্চলে আবার চালু হয়েছে। তবে এবারের নীল চাষে কাউকে বাধ্য করা নয়; দেশের প্রয়োজনে, অর্থনৈতিক উন্নয়নের লক্ষ্যে করা হচ্ছে। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি বিশেষ করে ক্ষতিকর ফসল তামাকের পরিবর্তে নীল চাষ করে দেশ সমৃদ্ধ হোক এটা সবারই কাম্য।
কৃষির আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে সর্বক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হোক এ কামনা করে সবাইকে নিরন্তর শুভেচ্ছা।